রজত শুভ্র চ্যাটার্জি

০০২৬

এই পবিত্র দিনটির উদযাপন প্রতিবছর ১৪ই ফেব্রুয়ারিতেই করা হয়। যুগ যুগান্ত ধরে, বিভিন্ন বয়েসের যুগলেরা এই দিনটি মনে রাখেন একান্তই নিজেদের মত করে। একে, সেন্ট ভ্যালেন্টাইন এর উদযাপন দিন হিসেবেই ঠিক করে রেখেছেন পশ্চিম দুনিয়ার খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীরা। কোন আপত্তি তো নেইই, বরং, আমরা একে সাদরেই গ্রহণ করেছি নিজেদের মত করে আনন্দ করবার জন্য ।

আমি যেহেতু এই পৃথিবীর, এই মানব সভ্যতারই অংশ, সেহেতু, এই ভালোবাসার বিশেষ দিনটির বাইরে থাকতে পারিনা। কোনদিন থাকিওনি। বলতে একটুও দ্বিধা নেই যে এই দিনটির অপেক্ষায় হয়ত আমিও অজান্তেই বিভোর থাকি। বিশেষ কিছু যে করে উঠি এমনটা নয়। তবু ভাল লাগে যখন ভ্যালেন্টাইনরা একে অপরকে শুভেচ্ছা জানায় এই বিশেষ দিনে। এই পরিণত বয়েসে পিছন ফিরে তাকালে কত কত ভ্যালেন্টাইন চোখের সামনে ভেসে ওঠে। অল্প বয়েসে – সরস্বতি পুজোর মণ্ডপে, পরে ম্যাডক্স স্কোয়ারে দুর্গা পূজার বিস্তীর্ণ পরিসরে, উকি ঝুঁকি মারেনি, ভ্যালেন্টাইনের মুখ, এমনও নয়। কিন্তু মোল্লার দৌর মসজিদের মতই আমারও এর বেশি এগুনো হতো না যদি আচমকাই আমার ভ্যালেন্টাইন নিজে থেকেই ধরা দিতো ।

আমার জীবনের যে আসল ভ্যালেন্টাইন, তার সাথে পরিচয়ের সুবর্ন জয়ন্তী এই ২০২২ এর আগস্টে। বিবাহ নামক প্রতিষ্ঠানে প্রবেশ আরো বছর তিনেক বাদে। আজও সেই আমার একমাত্র ভ্যালেন্টাইন যাকে ওই ভাবেই, ওই চোখেই দেখা যায়।

তবু আমাদের পরিবারেই, এক্কেবারে ভ্যালেন্টাইন্স ডে তেই এসেছিল একজন। সে আমাদের ভাগ্নী – একটা দিদির একটাই কন্যা। ওর জন্ম ১৪ ফেব্রুয়ারি। ওই প্রজন্মের সেই একমাত্র কন্যা। সেই ভাবে দেখলে ওই তো আসল ভ্যালেন্টাইন, আমাদের পরিবারে। আজ যদিও তিনি দু দুটি সুপুত্রের মা, তবু, আমাদের কাছে সেই, মিষ্টি – আজও রয়ে গেছে ভ্যালেন্টাইনের মতোই আদরের। Happy Birthday Mamoni.

আমার ব্যক্তিগত জীবনে আছে আমার দুই নাতনি। আমাদের একমাত্র পুত্র ও পুত্রবধূর দুই কন্যা। ওরা তো আমার ক্রাশ। বড়ো জন শান্ত, সমাহিতা। বুদ্ধিমতী। পড়াশুনো নিয়ে ব্যতিব্যস্ত। ছোট জন, তুখোড় অথচ প্রখর সজাগ, পরিবারের সবাই ঠিক ঠিক আছে কি না দেখার ভার নিয়ে বসে আছে। ওরাই এখন আমার, আমাদের ভ্যালেন্টাইন। ওদের ছাড়া জীবন ভাবতেই পারি না।

যারা এখনো ভ্যালেন্টাইন খুঁজে পাওনি, অবিলম্বে, খুঁজে নাও। এই আশীর্বাদ করি। জীবনে একজন প্রকৃত ভ্যালেন্টাইন, জীবনটাকেই পাল্টে দিতে পারে। যে অসময়ে তোমাকে সাহস দেবে। পাশে থাকবে। সুসময়ে, ভাগ করে নেবে তোমার আনন্দ। আর শান্তি দেবে অশান্তির সম্ভাবনায়। যে কোন উৎসব পালন করতেই হবে। যত সেলিব্রেসন, তত পজিটিভিটি।

Celebrate, celebrate and celebrate.

ভালবাসার থেকে ভালো আর কিছু হয় না কি ?

সবাই ভালো থেকো।

ওম শান্তি।

Featured Image : Internet

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here